গাজায় প্রলয়ঙ্করী ঝড়ের আশঙ্কা: ৯ লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বিপর্যয়ের মুখে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় নতুন এক প্রলয়ঙ্করী প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রবল ঝড় ও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে চরম সতর্কতা জারি করেছে। এ পরিস্থিতিতে দক্ষিণ গাজায় তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া ৯ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মারাত্মক বন্যা ও বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারেন।
খান ইউনিস পৌরসভার মুখপাত্র সায়েব লাক্কান জানিয়েছেন, উপকূলীয় এলাকায় অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা হাজার হাজার তাঁবু বন্যায় প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। যুদ্ধের কারণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ও উপচে পড়া বৃষ্টির পানি শহরবাসীর জন্য অতিরিক্ত হুমকি তৈরি করছে।
লাক্কানের ভাষ্যমতে, বর্তমান পরিস্থিতি ‘অভূতপূর্ব ও বিপর্যয়কর’। তিনি বলেন, ইসরায়েলি হামলায় শহরের ৮৫ শতাংশ সড়ক, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন নেটওয়ার্ক ধ্বংস হয়ে গেছে। এর ফলে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টন ধ্বংসস্তূপ নগরীর বিভিন্ন স্থানে জমা হয়েছে। জ্বালানি সংকটের কারণে পয়ঃনিষ্কাশন স্টেশনগুলো যে কোনো মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
পৌরসভা জানিয়েছে, অক্টোবরের ১০ তারিখ পর্যন্ত তারা মাত্র ১৬ হাজার লিটার ডিজেল পেয়েছে, যা জরুরি টিমগুলোকে মাত্র তিন দিনের কাজ চালাতে সক্ষম করছে। বর্তমানে সীমিত সরঞ্জামে বাঁধ তৈরি ও পানি প্রবাহ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো জরুরি কার্যক্রম চলছে।
খান ইউনিসে মোট ২ হাজার ২০০টি ড্রেনেজের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৯০০টি ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘ-সমর্থিত প্রকল্প কিছু ড্রেন পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করলেও তা বড় বিপদের মোকাবিলায় যথেষ্ট নয়।
সায়েব লাক্কান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দ্রুত মোবাইল পাম্প ও জরুরি সরঞ্জাম পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গাজার উপকূলে দুই মিলিয়ন বাস্তুচ্যুত মানুষকে বাঁচাতে এখনই আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ অপরিহার্য।
এদিকে, ইউএনআরডব্লিউএ (UNRWA) জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ২ লাখ ৮২ হাজারের বেশি বাড়ি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শীতকাল শুরুর আগে হাজার হাজার পরিবারকে তাঁবুতে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষে গাজার সরকারি গণমাধ্যম জানিয়েছিল, উপত্যকার ৯৩ শতাংশ তাঁবু ভেঙে পড়েছে এবং সেগুলো বসবাসের উপযুক্ত নয়।
Share this content:



Post Comment