গৌরনদীর প্রত্রিনিধি
বরিশালের গৌরনদীতে কোনো নিয়ম-নীতি ও আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করেই রাতের আঁধারে বিনামূল্যে বিতরণের সরকারী পাঠ্যপুস্তক ভাঙারির দোকানে কেনাবেচার অভিযোগ উঠেছে। খবরপেয়ে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার বেজগাতি বাসস্ট্যান্ড এলাকার মহাসড়কের পাশে ভাঙারি ব্যবসায়ী মামুন শিকদারের ভাঙারির গোডাউনে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন।
অভিযানকালে ভাঙারির গোডাউনে চলতি ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের সরকারি নতুন পাঠ্যপুস্তক ক্রয় ও মজুতের সত্যতা পাওয়া যায়। এ সময় আলামত হিসেবে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের কিছু সরকারি বই জব্দ করে নিয়ে যান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেজগাতি বাসস্ট্যান্ড এলাকার মহাসড়কের পাশে ভাঙারির দোকান পরিচালনাকারী মামুন শিকদার দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি পাঠ্যপুস্তক অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত। রোববার সন্ধ্যায় তার দোকানে নতুন সরকারি বই প্রকাশ্যে কেনাবেচা হতে দেখে স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেন।
ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক সংবাদকর্মী ছবি ও ভিডিও ধারণ করলে ভাঙারি ব্যবসায়ী মামুন শিকদার ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযুক্ত ব্যবসায়ী সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে ‘আপনারা যা পারেন করেন’ বলেও মন্তব্য করেন। এছাড়া অভিযানের সময় মামুন শিকদারকে রক্ষায় কথিত এক সংবাদকর্মী প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্থানীয় একাধিক সংবাদকর্মী জানান, উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেওয়ার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে এসে সরকারি বইয়ের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন। তবে বিষয়টি মোবাইল কোর্টের আওতাভুক্ত না হওয়ায় সংবাদকর্মীদের বাদী হয়ে সংশ্লিষ্ট ভাঙারি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভাঙারি ব্যবসায়ী মামুন শিকদার দাবি করেন, ‘আমি পুরনো বই ক্রয় করেছি। কাউকে হুমকি দিইনি।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘বিষয়টি মোবাইল কোর্টের আওতাধীন না হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।’
এ প্রসঙ্গে বরিশাল জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন বলেন, ‘টেন্ডার ছাড়া সরকারি বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’