মুক্তির মুখ
খুলনা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রকিবুল ইসলামের সমর্থনে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন। শনিবার বিকেলে খুলনার ফুলবাড়ী গেট চত্বরে
খুলনা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রকিবুল ইসলামের সমর্থনে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন।আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন বলেছেন, নির্বাচন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টার দৃঢ়তা, সেনাবাহিনী প্রধানের অতি দ্রুত নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি এবং জনগণের শক্তির ঐক্যের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়ে গেছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না।
শনিবার বিকেলে খুলনা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রকিবুল ইসলামের (বকুল) সমর্থনে ফুলবাড়ী গেট চত্বরে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জহির উদ্দিন এ কথাগুলো বলেন। শ্রমিক দলের খানজাহান আলী থানা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে তিনি আরও বলেন, ‘যাঁরা নির্বাচন নিয়ে চক্রান্ত করছেন, নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার টালবাহানা করছেন, তাঁরা শুনে রাখুন—যাঁরা নির্বাচনের বিরোধিতা করবেন, তাঁরা শুধু গণতন্ত্রের শত্রু নয়, তাঁরা দেশেরও শত্রু।’
গত ১৭ বছর ধরে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে দেশের নির্বাচনব্যবস্থা প্রহসনে পরিণত করা হয়েছিল মন্তব্য করে বিএনপির চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, দেশের মালিকানা জনগণের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে একটি পরিবারের হাতে কুক্ষিগত করা হয়েছিল। কিন্তু এ দেশের তরুণ ছাত্র-জনতা বিএনপির তৈরি করা জমিনের ওপর দাঁড়িয়ে সেই স্বৈরাচারকে ক্ষমতা থেকে বের করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘দেশনায়ক তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার আলোকে আমরা সকল গণতান্ত্রিক শক্তির সমন্বয়ে একটি ঐকমত্যের সমাজ গড়তে চাই, যা গণতন্ত্রের পূর্ব শর্ত।
প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে জহির উদ্দিন বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের ১৭ বছরের ত্যাগ এবং ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদের শক্তির একমাত্র অবলম্বন হলো বিএনপিসহ সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের নৈতিক সমর্থন। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাতিকে আশ্বস্ত করেছেন যে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। এই ঘোষণার মাধ্যমে তিনি জনগণকে শঙ্কা থেকে মুক্তি দিয়েছেন। সরকারের দৃঢ়তায় জনগণ খুশি। আমরা তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।’
জহির উদ্দিন বলেন, ‘যাঁরা জাতীয় নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য টালবাহানা করছেন, যাঁরা একটি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্ব না রেখে অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় রেখে প্রভাব বিস্তার করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন, সেসব দেশি–বিদেশি শক্তিকে আমরা জানিয়ে রাখতে চাই—জনগণ তার মালিকানা চর্চা করবে ভোটের মধ্য দিয়ে, ব্যালট পেপারের মাধ্যমে। এত বছর শেখ হাসিনা নিজেই ব্যালট পেপার ছাপাত, নিজেই ব্যালটে সিল মারত। এই অপকর্মে রাষ্ট্রের তহবিল থেকে পালা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহার করা হতো। সর্বশেষ ২০১৮ সালে পুলিশকে রাতের বেলায় ব্যবহার করা হয়েছে নিশিরাতের ভোটের কারণে। আমরা আর এ ধরনের নির্বাচন হতে দেব না।
ভোটারদের প্রতি এই বিএনপি নেতার আহ্বান, এবারের নির্বাচন শুধু সরকার গঠনের প্রশ্ন নয়, এর ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন হবে। তাই ধানের শীষ জিতবে কি জিতবে না, শুধু এই আলোচনা এখন গৌণ। ধানের শীষ শতকরা ৬০ ভাগ ভোট পেল কি পেল না, এই লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। ধানের শীষের প্রার্থীদের সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করতে হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খানজাহান আলী থানা শ্রমিক দলের সভাপতি কাজী শহিদুল ইসলাম। থানা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক জিয়াদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও খুলনা–৩ আসনের দলের মনোনীত প্রার্থী রকিবুল ইসলাম।
সমাবেশে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম (মনা), সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম (তুহিন), খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মীর কায়ছেদ আলী, খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগ হোসেন, খুলনা মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. মজিবুর রহমান, সদস্যসচিব শফিকুল ইসলাম শফিক প্রমুখ